।।প্রস্থানপূর্ব।।
আরোগ্যের কাছাকাছি এসে সব বল্কলবাঁধন খুলে গেছে
ভিতর থেকে বেরিয়ে পড়েছে যেন অমৃতধারা ও ঈশ্বরের পথ
কয়েকটি উন্মুখ কথা থমকে দাঁড়াচ্ছে দরজায়, যেতে হবে
পাখিদের জন্য অভিনব বাসস্থান তৈরী হচ্ছে ক্রমশ, অনুক্ষণ।
কোথাও বাঁশির শব্দে আবার নিবিড়তম প্রাণ জন্ম নিলে
অতীতের অন্তরীক্ষ্য, ছায়াপথে আশ্চর্য মানুষ সাড়া পায়,
অগ্রসর ভাঙ্গনের মুখ কোন দিকে যাবে যারা কখনো শোনেনি
কালান্তর ডাকে বুঝি, তবু তারা ডাকেনা কবিকে আর্তস্বরে।
এখন সময় কিছু শীতসম্বোধনে, আগুনের পাশে উঠে আসে
দেখি সে কখনোই দেয়না অভয়-আশ্বাস, যদি মেনে চলি শুধু
প্রাকৃতিক নিষ্ফলতা, দৃশ্যচ্যুত নীরবের সতত গমন অভিপ্রায়।
।।জীবিতে ও মৃতে।।
এখন প্রাকৃতভূমে আদরিণী শরীরের মতো সবই নম্র সুদূর
যদিও শতেক পাখি ভেঙে পড়ে আদরের আত্মার ভিতরে
পাখিমানুষের সেই হাহাকার ক্যামেরায় সপ্রতিভ আলোক
আরো কিছু বেলাগাম ধ্বংস আনে পূর্বাপর এখনো নিরখি
যেন সে বিষণ্ণতা অবচয়নের পরে শুনি তারই মুহূর্তগুঞ্জন।
আহা অভাবিত এত সুখঅসুখের কথা বলে প্রসন্ন করোটি
অরুচি নিয়ে ক্ষুধারাও জেগে ওঠে নিজস্ব কায়ায়, আসনে
চোখ বেঁধে রাখো ভুলি সে ছলনাবিকী বা যে প্রসঙ্গতিমির
শুচিতা ও অপঘাতে অন্ধ করে রেখাশ্রিত জীবিতে বা মৃতে
একটি আলোচ্ছবি আহরিত হতে হতে ক্রমে শৈত্য হারায়।
।।সমুদ্রলোভ।।
১
এও এক ভালোবাসা
যখন প্রজাপতি মজ্জা থেকে রং চুরি করছে
এও এক সতর্ক প্রলেপ
যখন নীরবতা পবিত্র হয়ে উঠছে জানালায়
আর দূরে পার্বণে মানুষের ঢল নামছে
জল থেকে আলগা শরীর তুলে নিচ্ছি সকলেই
যেন এও এক শুচিস্নিগ্ধ স্বভাবের কথা
অথচ অন্য সুখে ঘুমন্ত গলুই
স্বপ্নে দেখছে নিরঙ্কুশ শুখা চর
আর ঈশ্বরের সমস্ত আভরণ খুলে পড়ছে
সেখানে পরমাসন্ন বাস্তবতা থেকে।
২
অন্তরে বিগ্রহ নেই অথচ এখানে এক
আশ্চর্য সংবাদ আমরা গোপন রেখেছি
খুঁজে দেখো বাইরে কেবলই সাদা ফুল
ভিতরেও রাশি রাশি জমানো কাগজ
জটপাকানো দড়ি ও চাদরে জেগে থাকা
ম্যাজিক পেন্সিল – আরো কত কি!
সবিস্ময়ে তবু মাঝে মাঝে ভুলে যাই
এসবের ধ্রুব নিঃশ্বাস ছেড়ে কোনদিন
সুপ্রসন্ন চলে যেতে হবে নির্দ্বিধায়
বাণিজ্য থাকবে তার সমুদ্রলোভের পাপ নিয়ে।
*****
প্রচ্ছদঃ সুমন মুখার্জি