আর্দ্রতার কোচিং সেন্টার
১
শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা
বলাকা কোচিং সেন্টার ভরসা
এইভাবেই বর্ষা শুরু। অন্য সবকিছু শেষ হয়ে এল। ঝাউবনের ঝরঝর কুড়িয়ে ফেরার পথে কোচিংয়ের কাছাকাছি পৌঁছতেই বৃষ্টিও ফুরিয়ে যায় … শুধু সাদা মেঘ… দরজায় প্রতীক্ষা করছে। পাশেই শুকনো ইচ্ছেগুলোর মধ্যে কেউ দাঁড় করিয়ে রেখেছে সাইকেল। গোলাপি রঙের এক আশ্চর্য গল্প…
২
মাস্টার এখনও আসেনি। তদুপরি কোচিং সেন্টারের তালাবন্ধ দরজায় বৃষ্টি নামছে। একটু একটু ভিজে যাচ্ছে বর্ষাবিকেলের ঘুমেল দীর্ঘশ্বাস। ছাতায় আর মানাচ্ছে না।
ছাতা ও সাইকেল সহযোগে মাস্টার পৌঁছল কাকভেজা। অভিভাবকদের বিরক্ত মুখের দিকে সন্ত্রস্ত হেসে তিনি কোচিং সেন্টারের দরজা খুলতেই মেঘ বেরিয়ে এল… সামুদ্রিক কোনও অচেনা পাখির ডাক শুনতে পেল সবাই। এদিকে মাস্টারমশাইয়ের ভিতরে তখন নোনাঢেউ আর এলোমেলো হাওয়ার ঝাপট। আজই সবরকম আর্দ্রতা শেখাবেন তিনি…
৩
বৈষ্ণব পদাবলীর নোট দেওয়া শুরু হতেই হাসি আর হাসিতে ঝমঝম করে উঠল ক্লাস। কোচিংয়ের মাস্টার তখনও নিজের জীবনের দিকে তাকিয়ে থাকেন। যতদূর হাত বাড়ান… শুধু আর্দ্রতা, আর আর্দ্রতাই খুঁজে পান।
চোখ থেকে জলীয় বাষ্প নামিয়ে রেখে, তাই তিনি বলছেন… একটু আস্তে… প্লীজ
৪
চোখের জলের গন্ধে ঘুম ভাঙছে। সমগ্র চরাচরে একটি কাকের ডাক ছাড়া আর কিছু নেই। দরজা খোলা, তবু, ঘরের মধ্যে একা বসে বাইরের সব প্রত্যাখ্যানের দিকে তাকিয়ে থাকেন। নিজের সঙ্গে সব কথা শেষ হয়ে এলে যখন শুধুমাত্র কয়েকটা দীর্ঘশ্বাস পড়ে থাকে বিকেলের ক্লাসে, তখন তিনি দেখতে পান … বিড়ালের মতো চুপিচুপি ঘরে ঢুকে পড়ছে রবীন্দ্রসঙ্গীত …
*******
প্রচ্ছদঃ সুমন মুখার্জি