উল্লম্ব সাহস
রবিন বণিক
একদিন অসম্ভব বলে কিছু ছিল না
একদিন বহির্ভূত বলে কিছু ছিল না
একদিন হারিয়ে যাওয়া জন্মদিন খুঁজতে খুঁজতে
অবশ্যম্ভাবী বৃষ্টির মধ্যে ঢুকে পড়লাম
জলবিন্দুর ভেতর অন্ধ ঋতুর দাগ
একদিন সমস্ত যতিচিহ্নের পাশে গেঁথে দিলাম উল্লম্ব সাহস
ক্রমশ বেরিয়ে এলো আমাদের সাংবিধানিক জিভ
আর জিভ থেকে ক্রমাগত চুঁয়ে পড়ছিল কামিনী–কাঞ্চন
ছেঁড়া পদ্যের বাস্কেটবলে
অমিত চক্রবর্তী
ছেঁড়া পদ্যের বাস্কেটবলে আমি নিশ্চয় ম্যাজিক জনসন।
টেবিল থেকে ছোঁড়া জট পাকানো পদ্যের গোলা
ওই চলল ট্র্যাশের দিকে, সুচারু পথে, অধিবৃত্ত –
যত আধভাঙা শব্দখেলা, যত মনখারাপের বিবরণ।
কি জানি কি লেখা আছে গভীরে
রক্তচোষা শব্দের স্তোত্র –
কি ভাবে নিংড়ে নেয়, কি ভাবে, কি ভাবে
নিংড়ে নেয়
সেই শব্দগুলি
ভিজে ন্যাতার মত
নিংড়ে নেয় আমায় বেয়াড়া, অসম শব্দের দল।
এই দেখো সে নামছে সুবিন্দু থেকে, পর্যটনে ময়লার
ঝুড়ি, কানায় লেগে ঢুকে গেল বালতির ভেতর।
কত খুশি সেই সাদা গোলা। কত হাততালি।
কবিতা বিসর্জন ট্র্যাশে
শূন্যতা ধরে আছি ট্রফির মতন,
ছেঁড়া পদ্যের বাস্কেটবলে আমি নিশ্চয় ম্যাজিক জনসন।
এলিজাবেথান সনেটের বই
স্বপ্ননীল রুদ্র
পর্দা সরিয়ে তরুণী বেলা টেবিলে সারারাত্তির খোলা
এলিজাবেথান সনেটের বইটির পাশে বসেছে,
মুখ-খোলা বোতল তুলে গলায় ঢালে তলানিটুকু।
পাশে বিছানায় মাখামাখি হয়ে আছে
বহু শ্রম দিয়ে মাখা ময়দার মণ্ডর মতন
মথিত-পেলব গতরাত্রি। নিষ্পেষিত চাদরের
কোণে পড়ে থাকা প্রায়-অচেতন কোলবালিশ—
এই ছাত্রীবাসে গ্রীষ্মাবকাশ নামের
নতুন বোর্ডার এসে উঠেছে ক’দিন হল,
তার ট্রাঙ্ক ব্যাগ ভর্তি মন্থরতা, অবকাশ
পৌনে বারোটায় এই আলুথালু বিছানায় রাত রেখে
প্রকৃতির ডাকে সদ্য উঠে গেছে যে ছিল শায়িতা-
মায়াবী-যামিনী ওড়না তার মেঝেতে লুটিয়ে আছে…
এখনও ঘরে ফেরেনি দেখে বারোটার বেলা বালিশের পাশে
রাখা সেলফোন তুলে চার্জারে বসিয়ে দেয়
পাতা উল্টে পড়া শুরু করে
শেক্সপিয়রের পূর্বসুরি সনেটিয়ারদের সনেটগুলি…
*****