কবিতাগুচ্ছ – অরিত্র চ্যাটার্জি

শর্ট ফিল্ম

ধ্বনি যতদূর অবধি যেতে পারে

তা ক্রমশ অতিক্রম করে

একটি শীতল আধারের নিচে

তুমি এইবার মাথা পেতে দিয়েছ

দৃষ্টিকোণের বাইরে কয়েকটি আঙ্গুল

আঠালো শরীরের মত খেলা করছে

মগজময়, নিপুণ আঁচড়ের মতন

তরল গড়িয়ে পড়ছে উচ্চতা সমেত…  

-পাঠক, এই অবধি এসে যদি মনে হয়

এহেন অভিজ্ঞতা আগেও হয়েছে কখনো,

শুধু জেনো তুমি একা নও…

এই দৃশ্যটির ভেতর তুমি আর আমি

দুজনেই আছি, এমনটা মনে করি

অথচ নিজস্ব অবস্থান বিষয়ে

তোমার যে ধারণা তা আমার থেকে

কিঞ্চিৎ আলাদা, কিছুটা আন্দাজ মতই…

যেভাবে প্রতিসরিত আলো বাতাসের ঘনত্ব

বিভেদে একই সমুদ্রকে করে তোলে,

তোমার কাছে বেশি নীল, আমার কাছে স্বল্প সবুজ

অথচ তুমি আর আমি, দুজনেই আছি

এই একই দৃশ্যের ভেতর, যা পূর্বনির্মিত নয় 

তবুও সিনেমার মত, আমাদের সমভিব্যাহারে

ক্রমেই বিস্তৃত হয়ে চলেছে …

ছায়ার পাশে কেউ নামিয়ে রাখছে ফুল।

ছায়া, মুখাবয়বহীন

হেঁটে যাচ্ছে বলয়িত পথে , সিঁড়ি ভেঙ্গে

জিভের ডগায় গড়িয়ে নামছে চাবি

ঠাণ্ডা ছুরির মতন, দরজার ওপারে

তোমারই আরেক ডামি অপেক্ষা করছে

স্বপ্নে এর আগেও তাকে দেখেছো এবং

তার গোপন আক্রোশ…

পেঙ্গুইনদের ভাষা সম্বন্ধে আমাদের সম্যক ধারণা নেই এখনো।

অথচ তাদের কথা ভাবলেই আমাদের বরফ মনে পড়ে,

মনে পড়ে জলজ ঘাস, সামুদ্রিক মাছের ঘ্রাণ ও ভাসমান হিমশৈল।

ভাবো ওই ভাসমান হিমশৈল, মানুষের না বলা কথার মতন

ওর নব্বই ভাগ অগোচরে থেকে গেল চিরকাল, তীব্র অনুভূতি

যা কিছু বুকের ভেতর জমাট বেঁধে রেখেছিলে

চরাচরব্যাপী একটা খুব দীর্ঘ শীতকাল ধরে, তা একদিন উবে যাবে।

উবে যাবে বিস্মৃতির মতই, তোমার ওই সুবৃহৎ উপাখ্যান

আসন্ন গ্রীষ্মে তরল বরফের নিচে হয়ত

আবারও খুঁজে পাবে দেখো সমুদ্রগামী কোনো নিঃসঙ্গ পেঙ্গুইন …  

প্রচ্ছদঃ সায়ন্তনী দাশগুপ্ত

*****