দুটি কবিতা – অর্ণব চক্রবর্তী

শহরের মানুষ

 

এরকম খোলা আকাশ আমার আছে

কিন্তু এত এত পাখি নেই

আসল প্রশ্ন হল এত পাখি আদৌ জরুরি কিনা

কারও কারও যেমন বউ বললে ঘোমটার কথা

মনে পড়ে-

আমারও আকাশ দেখলে পাখির কথা।

হ্যাঁ, খুচরো অদরকারি সম্পর্কায়ন এবার

ছাড়ার সময় এসেছে

প্রেম করলেই জীবন ভাগ করে নেবার গল্প নেই

মায়ের শাড়িতে ঘরোয়া গন্ধ আর আবশ্যিক নয়

অতিথিকে অভ্যর্থনা করার রীতি আমি আস্তে আস্তে

ছেড়ে দিচ্ছি

ভাগ্যদায়ী আংটি তো ফেলে দিয়েছি অনেক আগেই

কিছুতো হয়নি, দিব্যি আছি

আংটির বদলে আঙুলে আছে সিগারেট

আর বোনের সেলাই করা রুমালের বদলে এখন

পকেটে থাকছে বাহারি গ্যাসলাইটার

শুধু ছাড়ব ছাড়ব করেও ছাড়তে পারছি না

সুখী জীবনের গন্ধ ছড়ানো

স্কচের বোতল

এখনও আগের মত নেশা হয় জানেন, শুধু

বয়স বাড়ছে তো, ওই একটাই…

আপনার হয় সাউন্ড ঘুম? রাত্রিবেলা?

কনটেন্ট

কবিতাকে কাস্তের মত ধরে বসে আছি কতকাল।

অথচ জীবনের কোথাও আগাছা নেই এতটুকু,

জংলী ঘাস নেই একছটাক।

কখনও হাহা করে হাসতে হাসতে, কখনও বিমর্ষ হয়ে, বদরাগী হয়ে,

ক্লান্ত সূর্য এখন ঢলে পড়ছে পশ্চিমে;

আমিও লজ্জিত হয়ে গোটা দিন গদ্যের অভিমুখ রেখেছি নীচে।

সে কোদালের মত দাঁত বার করে পড়ে আছে,

অথচ সামনে কোথাও মাটি নেই, বীজ নেই,

কোথাও কোন সম্ভাবনা নেই।

চারপুরুষের ব্যবহৃত হাতুড়ি আর টিনের বাক্সভরা

গুচ্ছখানেক পেরেক এখনও গামছা দিয়ে

কোমরে গোঁজা,

কিন্তু ফাঁকা জীবনের গায়ে টাঙানোর মত কোন চওড়া দর্শন নেই।

পথ আছে কিনা জানিনা, মানুষ আছে কিনা জানিনা।

বাতাসে উড়িয়ে দেবার মত ভালোবাসা অবশ্যই আছে,

কিন্তু উটপাখির মত তার সুবিশাল দেহে দুটো সংক্ষিপ্ত ডানা

ঘুমিয়ে আছে আজও।

******     

প্রচ্ছদ : সুমন মুখার্জী