আঁকিবুঁকির আখড়া
“কেজো বাড়ির পাশে মেজো বাড়ি
আমরা তবু রোদ্দুরকাড়ি
ধূলোবালির পর বালি ধূলো
হঠাৎহাওয়া তোর ঠোঁট ছুঁলো
সে তো চাইবেই…অস্ফুটে তুমি বলে ওঠো।”
~ চন্দ্রবিন্দু
তুলে ধরা ছবিগুলি সব কটিই খেয়ালে বেখেয়ালে আঁকা, ছবির সাথে ছবির আড়ালে ভাবনাকেও পেশ করেছেন শব্দপ্রবাহের দ্বারা। আমাদের ঘিরে থাকা নানান অনুভবকে কেন্দ্র করে এই চিত্রলেখা এক স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ যা সর্বজনগ্রাহী হবে আশা করি।
কোলাজ
কোলাজ
(বাঁ দিক থেকে)
১. ‘ভাড়াবাড়ির মেজো মেয়ে’
যে মেয়েটার সারাদিন চলে যায় বাড়ির ছোটো বড় ফাইফরমাশ খাটতে খাটতে, বিকেল বেলা কপালের বিন্দু বিন্দু ঘাম মুছে যে মেয়েটা চুপি চুপি ছাদে চলে আসে গতহপ্তায় পাওয়া চিঠিটা আরেকবার লুকিয়ে পড়বে ব’লে, খুব সাধারণ সেই মেয়েটা শুধু সেক’টা পলকের জন্য হয়ে ওঠে কথোপকথনের নন্দিনী। হৃদস্পন্দন দ্রুত হয়। কাগজের পলকা নৌকা ভীষণ দুঃসাহসে ফুঁসে ওঠা সাগরে ময়ূরপঙ্খী পাল তুলে এগিয়ে চলে…বহু বহু দূরে।
২. অন্ধ গানওয়ালা
কখনো মনে হয়েছে যে তুমি যা সৃষ্টি করো তা তুমি অনুভব করতে পারো না? সমস্ত জুড়ে যেন এক অসহনীয় জড়তা জড়িয়ে আছে আষ্টেপৃষ্ঠে। অন্ধ ওই গানওয়ালা জানে না ও কি গান বাজায়। ও কখনো একবার আমাকে বলেছিল, ওর কানজোড়াই ওর চোখ। কিন্তু এই পৃথিবীর নিরবিচ্ছিন্ন অন্ধকার ওর কানের পর্দা ভেদ করে ওর মধ্যে প্রবেশ করেছে। তাও, ও বাজাতে থাকে। ও গাইতে থাকে কারণ ও না গাইলে যে ও নির্জীব হয়ে যাবে, পাথরের মতো। ও বাঁঁচবে, ও বাঁচতে চায়।
৩. ‘আশ্রয়’
“একটা জন্ম রেখেছিলাম তোমার সাথে কথা বলার একটা জন্ম রেখেছিলাম কাঁঠালতলায় মাদুর পেতে তোমার পাশে কাটিয়ে দেব।” (কবিতা- তারাপদ রায়)
“স্বপ্ন”
অস্ফুটে
“স্বপ্ন”
“আবার উড়বো ব’লে চাইছি দুটো ডানা বলো মেঘলা হয়ে থাকবে কতক্ষণ? আমরা ভীষণ বিপদমুখী উত্তেজনায় আমরাই আবার ভাঙতে থাকি মন। এরচেয়ে বেশি কী বলো আর চাইতে পারি? ভাবি এখন কি আর করবে অপেক্ষা ও? অন্ধকারের অন্ধকার আজ কম পড়েছে যদি পারো,সেটাই ভালোবাসতে শেখাও।” (গান: দেবদীপ মুখোপাধ্যায়)
অস্ফুটে
কখনো এমন মানুষের প্রেমে পড়েছ যাকে তুমি কখনো পাবে না, কখনো না? তোমার মন জানে, এ ভয়ানক ভুল হতে চলেছে, এক তরফা ভালোবাসার যন্ত্রণা প্রবল, তাও হৃদয় সেই পানেই ছোটে। তুমি নিজেকে দেখো খুশির দোলনায় দোল খেতে তার সাথে, আর মনে মনে বলো, সে আমার হোক আর শুধুই আমার হোক। শত যুক্তিতেও মনের মুখ অন্যদিকে ফেরানো যায় না।
নীপাঞ্জলি রায়
নীপাঞ্জলি রায় একজন স্বাধীনচেতা শিল্পপ্রেমী মানুষ যিনি শুধু আঁকাই নয়, আরো নানান শিল্পের সাথে নিজের ইচ্ছায় যুক্ত। খাতার উপরে পেনের আঁকিবুঁকিতে ফুটিয়ে তোলেন নানান পছন্দের গান কবিতার ভাবনা। নিজের মনের গভীর চিন্তাগুলিকেও ছবির রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেন। সেই ছবিতে এক অদ্ভুত স্বকীয়তা আছে যা দর্শকের মনে অকৃত্তিম অনুভূতির জন্ম দেয়।