তিনটি কবিতা – পিয়াংকী মুখার্জি

একটি নিখুঁত কবিতা

নিঁখুত একটি কবিতা লিখব ভেবে কাটিয়ে দিচ্ছি রাতের পর রাত

চাঁদ উঠছে। আবার ডুবেও মরছে

আমি বসে আছি নিদ্রাহীন নামতার কাছে।

একটা নিঁখুত কবিতা লিখব লিখব করে ডিপ্রেশন এসে বসে পড়ছে মাথার কাছে।

ডাক্তার আসছেন, পাড়াপ্রতিবেশীরা বলছে মনখারাপ।

জ্বর। জলপট্টি।

কোথায় যেন খুব জোরে ডিজে বাজছে। মা খাইয়ে দিচ্ছেন ঘি মাখা ভাত।

একটা নিঁখুত কবিতা লিখব বলে তোমার দিকে এগিয়ে ধরছি ধারালো ছুরি 

কেটে দিতে বলছি সর্বনামের গলা 

আজ পূর্ণিমা। নদীতে ভরাকোটাল।

প্রেমিক আসছে। চুমুর পাশে চালিয়ে দিচ্ছে টেপরেকর্ডার 

‘থোড়ি দের ব্যায়ঠে রহো, আজ জানে কি জিদ না করো’….

ঘনত্ব

একটি উনুন। কিছুটা আগুন। একটি নির্ভীক রঙ।

লাল। সন্ন্যাস। নক্ষত্র

কুয়াশার পাশে দাঁড় করিয়ে রেখেছি জ্যান্ত মাছ

পুকুর কেটে রাস্তা তৈরি হচ্ছে

কালো। মানুষ। উল্কাপাত 

নিস্তব্ধতা ছিন্নভিন্ন করে আগাছা বাড়ছে। দুহাত বাড়িয়ে ডাকছে মানুষ। ছায়ার সাথেই এগোনো অধ্যায় 

সবুজ। চোখ। কক্ষপথ  

সূর্য উঠছে। আমরা পুরীর সমুদ্রে স্নান সেরে নিচ্ছি।  

 

 

পুনর্জন্ম

একটি গাছ। মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে রাস্তার ওপর 

আমি হেঁটে হেঁটে পার হয়ে যাচ্ছি যাবতীয় শোক

আমার পেছনে থেকে যাচ্ছে কিছু ঘরবাড়ি, কিছু পুকুরঘাট আর কিছু পড়ে থাকা ধানমাঠ

যে ধানমাঠে আমি লুকিয়ে নিতাম নিজের ফেলে আসা যৌবন 

যে পুকুরঘাটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখতাম শৈশবের প্রশ্রয় 

যে ঘরবাড়ি খুলে বিছিয়ে দিতাম তোমার বসার আসন…

সবটুকু ফুরিয়ে যায় একদিন। 

তারই মধ্যে কিছুটা  কুড়িয়ে তুলে নেয় রাস্তা 

কিছুটা ঝুলে থাকে গাছের ডালে

আমি আর তুমি পুনর্জন্ম সেলাই করি গায়ের কাঁথায়।

প্রচ্ছদঃ সুমন মুখার্জী

*****