সতীপীঠ
আমার যুবতী দেহ ভেসে যায়
ভাদ্রের গাঙুরে
কচুরিপানার সারি সরে সরে করে দেয় পথ
ইতিউতি দেবালয় ছুঁয়ে পৌঁছতে হবে
কোন এক কার্তিকের ভোরে
হিমঋতু নেমে আসা পাড়াগাঁয়ে।
তোমার অস্তি নেই বহুদিন
অন্য কোন গাছ, তারা, হেমন্তের মাঠে
লুপ্ত আছে সতীচ্ছদা
আর জন্মে পীঠস্থান হব।
যুবতী শরীরটুকু নীলকন্ঠ নয়…
পথে পথে লখাইয়ের শব।
আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে
জলছবি! ধোঁয়ার কাঁচ! ভরতী মেঘ
বৃষ্টি আন!
উঠোন দিন, কাঠপুতুল; শালিখ তিন
বৃষ্টি হোক
বেরসা মাস, ধান পুজোর; অশথ গাছ
মানত সই
উড়াল দিক, প্রজাপতির বউখানির
মিষ্টি মুখ।
বনান্তর। পথ হারায় ? কিশোরী গাছ
ভ্রমর সুখ
কেঁদে আকুল ; শরীরময়, নাম কি তোর?
চাঁদ ডুবুক
জোনাক রঙ, মাছের ঘাই, কি কলরব
তমঝ্ব ম শ্যামকিশোর, বাদল যান, কলহ-মান
দু’খান খান
নদীর স্রোত, ঝড়ের বেগ, নাম কী তোর
মন খারাপ?
দীঘির জল- রিক্সা ধোয়, শ্রীরাধিকার
ক্রমপ্রকাশ।
আঁখি ঝুরে, মন পুরে বৃষ্টি হয়,
বৃষ্টি সুখ
রামগিরি মেঘ পাঠায়, আষাঢ় মাস
প্রথম দিন।
ফসলের গান
এবছর ফসল তেমন ফলেনি- তাই
ভগ্নাংশের লবে রাখি জৈন প্রজ্ঞা
তাকে বিভাজ্য করে উলুধ্বনি বামুনের কোল
মাটির অল্প নীচে কন্দশস্য ঝলসালো
ধিকিধিকি তাপে
এ দেশে জন্মেছিল কচু-শাক-পাতাপুতি মেয়েরা
নেত্রকোনা থেকে মেঘ আগুনে আগুন হয়ে
চলে গেল মরা গাঙনীর চরে
পোকাদের লালাগ্রন্থি জাল ফ্যালে খরস্রাবী
ধানমাঠে শকট চালায়;
কৃষিদপ্তরের রিপোর্ট ওঠে নভোযান হালচিহ্ন চেনে
তবু নাকি নিষ্ফলা উপগ্রহের মাটি
প্রকৃতির হেঁসেল জুড়ে নুন মিষ্টি কম বেশি বিপরীত হারে…
কীটনাশকে বিমান ওড়ে, তবু
ফসল ফলেনি বলে
লোকাল ট্রেনের বগি-
সব্জি বেচা মাসি পিসি
এ বছরে গানের আকাল…
প্রচ্ছদঃ সায়ন্তনী দাশগুপ্ত
*****