তিনটি কবিতা – উদয়ন গোস্বামী

খন্ডগ্রাস

আধখানা চাঁদ উনুন নেভায় আধখানা চায় রুটি

ভালোবাসা, তোমায় দিলাম এক চুমুকের ছুটি

মোরাম মেশা বরাদ্দ রোদ ফুটিয়ে খাই রোজ

আমার জন্য ফুল তুলেছ, পাওনি মনের খোঁজ..

ফুলের মাশুল হিসেব হাওয়ায় হামলে পড়ে পাতে

চুমুর মতো পোষা বেড়াল হেটমাথা দুধভাতে

লেপ্টে থাকে, বিষ পেয়ে খুশ শুঁয়োপোকার গুটি

কাল বিয়োলে প্রজাপতি বেড়াল হবেন জুটি…

আধখানা চাঁদ বেড়াল বিয়োয় আধখানা চায় ছুটি

ভালোবাসা ফুল বিছানার আধখাওয়া জল রুটি..

প্রেত

যতদূর নিশিডাক ততদূর গিয়েছিলে কবি?

রসবতী মরীচিকা যতটুকু করেছিল লোভি

ততটা হেসেছ বুঝি, যূপকাঠ গয়নার মতো

ধরেছ অমৃত বুকে? হিমবাহ গলে গিয়ে ক্ষত

নদী হয়ে ভাসালো কি দেবগ্রাম, মৃত বারানসি?

অজশিশু, কাটা ধরে খুঁজেছিলে প্রেমিকের বাঁশি?

যতটা বিচ্যুত মাথা দূর থেকে বোঝে নাড়িটান

যতটা ধূলোতে লাল, ততটুকু বিষে আসমান

অচেনা বাদল হয়, নীল পায় নদী নদী হাসি,

ততটা কাঁদতে পারো?হতে পারো একা বানভাসী?

ডোরাকাটা লাউমাঁচা কতদিন থাকে অনুগত?

বেড়া ভাঙে বালিহাঁস ডানা মেলে পেঁপেপাতা যত

যদিবা অমৃত বুকে ধরে রাখে যুযুধান ছবি…

যতটুকু নিশিডাক ঠিক ততটুকু তুমি কবি…

সিক্তা

যখন প্রাথমিক জলের স্তরে বাস,

হাঁসের ছানাগুলো সাঁতারু পাঠ নেয়,

এটুকু খাঁটি আঁকা বাকি যা অভিনয়

বুঝিনি ঢেউ তুলে ঘটাবে সন্ত্রাস…

দ্বিতীয় স্তরে তুমি নাইতে নামলেই

গোপন ক্যামেরায় যেটুকু তুলে রাখি,

সেখানে ঢেউ কম সেখানে আলো নেই,

জমানো দম চেপে ঘাপটি মেরে থাকি…

কি আছে এর নিচে এখনো নেই জানা,

কিছুটা কালো রাত বুঝি বা জমা আছে।

স্বপ্নে মাঝেমাঝে তবুও দিয়ে হানা

দেখেছি কিভাবে যে কবিতা মরে বাঁচে…

তোমার জলাশয়ে আমার ঢোকা মানা।

ভয়ে উড়েই যাবে হাঁসের ছানাগুলো।

যেটুকু অভিনয় তবুও জানা ছিল

সেগুলো সোঁদামাঠে বন্দী রুলটানা…

******