১৯৪৮ সালের আগে পর্যন্ত ফিলিস্তিনের কবিতা মানেই ছিল ভৌগোলিক দেয়াল ঘেরা প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রের কবিতা। কিন্তু সময় এখন পাল্টে গেছে। বর্তমান দুনিয়ায় প্যালেস্টাইনের কবিতা গোটা দুনিয়ার প্রতিবাদী কবিদের কলম থেকে জন্ম নিচ্ছে। ১৯৪৮ সালে প্যালেস্টাইন-ইসরাইল যুদ্ধে প্যালেস্টাইনের বিদ্রোহী কবিতাগুলো সাধারণ মানুষের আত্মায় বিদ্রোহের যে আগুন জ্বেলে দিয়েছিল সেই আগুন ফিলিস্তিনিদের রক্তে এখনো টগবগ করে ফুটছে। ফিলিস্তিনিদের আত্মায় গেঁথে আছে এমন জনপ্রিয় দুটি কবিতা অনুবাদ করা হল।
আমি আর জিজ্ঞেস করি না
হালা আলিয়ান
তোমার সন্তান কয়জন
তোমার বাড়ি কোথায়
তোমার পেশা কী;
না, এসব নিয়ে আমি আর ভাবি না।
আমি হয়তো এখন ভাবি
তুমি তোমার দিনটি কীভাবে খরচ করেছ
দীর্ঘ রাতটি তোমার কেমন কেটেছিল
তোমার অসুস্থ ক্ষতগুলোর যত্ন
তুমি কীভাবে নিয়েছিলে,
বছরের নিয়ম মাফিক এলার্জি, তোমার
হঠাৎ কোন অসুস্থতা অথবা
এই বিষাক্ত জীবনকে তুমি কীভাবে
জয় করেছিলে এবং
জীবন পথে যখন অনেকেই থমকে দাড়িয়েছিল
তুমি তখন থমকে দাঁড়াও নি।
তুমি আমাকে বলো
দীর্ঘদিন বন্দিদশার পর
যখন প্রথম রাস্তাটি পার হচ্ছিলে
কেমন অনুভুতি হয়েছিল তোমার?
এসব নিয়ে তুমি এখন কী ভাবছো
সেটিই আমার কাছে এখন গুরুত্বপূর্ণ।
শিশুটি যখন ঘুমিয়ে
এমন সময় যখন বোমার আঘাত চারদিকে অন্ধকার।
তুমি তখন তোমার ঘুমন্ত শিশুটিকে উদ্ধারে ব্যস্ত হয়ে গেলে।
মৃত্যূর ভুত তখন তোমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়
আমার জানতে ইচ্ছে করে তখন তুমি কী ভাবছিলে?
আমি আর কখনই জিজ্ঞেস করবো না
তোমার বাড়ি কোথায়, তোমার ধর্ম কী!
আমি এখন শুধুই ভাবি
তোমাকে তারা কীভাবে নির্যাতন করেছিল
তুমি কীভাবে সেই ভয়কে জয় করেছিলে।
আমি শুধু ভাবি তুমি কীভাবে শত বিদ্রোহ,
শহরের বুকে ট্যাংক আর টিয়ার গ্যাসের মধ্যেও দাড়িয়ে
তুমি তোমার ভাগ্যকে জয় করেছিলে।
তোমার নাম, বয়স
তুমি দেখতে কেমন, আমার কাছে গৌণ একটি বিষয়
কারণ অলৌকিকভাবে এসব কিছুর ঊর্ধ্বে তোমার স্থান।
তোমার সন্তান কয়জন
তোমার বাড়ি কোথায়
তোমার পেশা কী;
না, এসব নিয়ে আমি আর ভাবি না।
আমি হয়তো এখন ভাবি
তুমি তোমার দিনটি কীভাবে খরচ করেছ
দীর্ঘ রাতটি তোমার কেমন কেটেছিল
তোমার অসুস্থ ক্ষতগুলোর যত্ন
তুমি কীভাবে নিয়েছিলে,
বছরের নিয়ম মাফিক এলার্জি, তোমার
হঠাৎ কোন অসুস্থতা অথবা
এই বিষাক্ত জীবনকে তুমি কীভাবে
জয় করেছিলে এবং
জীবন পথে যখন অনেকেই থমকে দাড়িয়েছিল
তুমি তখন থমকে দাঁড়াও নি।
তুমি আমাকে বলো
দীর্ঘদিন বন্দিদশার পর
যখন প্রথম রাস্তাটি পার হচ্ছিলে
কেমন অনুভুতি হয়েছিল তোমার?
এসব নিয়ে তুমি এখন কী ভাবছো
সেটিই আমার কাছে এখন গুরুত্বপূর্ণ।
শিশুটি যখন ঘুমিয়ে
এমন সময় যখন বোমার আঘাত চারদিকে অন্ধকার।
তুমি তখন তোমার ঘুমন্ত শিশুটিকে উদ্ধারে ব্যস্ত হয়ে গেলে।
মৃত্যুর ভূত তখন তোমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়
আমার জানতে ইচ্ছে করে তখন তুমি কী ভাবছিলে?
আমি আর কখনই জিজ্ঞেস করবো না
তোমার বাড়ি কোথায়, তোমার ধর্ম কী!
আমি এখন শুধুই ভাবি
তোমাকে তারা কীভাবে নির্যাতন করেছিল
তুমি কীভাবে সেই ভয়কে জয় করেছিলে।
আমি শুধু ভাবি তুমি কীভাবে শত বিদ্রোহ,
শহরের বুকে ট্যাংক আর টিয়ার গ্যাসের মধ্যেও দাড়িয়ে
তুমি তোমার ভাগ্যকে জয় করেছিলে।
তোমার নাম, বয়স
তুমি দেখতে কেমন, আমার কাছে গৌণ একটি বিষয়
কারণ অলৌকিকভাবে এসব কিছুর ঊর্ধ্বে তোমার স্থান।
গাজা
মাই জায়েদি
জানি, স্বর্গই হবে শিশুদের ঠিকানা
তাদের আঙুলগুলো মচকানো
তাদের কোমল চুলগুলো পুড়ে ছাই,
ধুলোমাখা গালের উপর তাদের
টানাটানা চোখগুলো ঘুমিয়ে আছে।
আমি আমার মাকে কাছে পেতে চাই
মা আমাকে বলুক
এখন সব ঠিকঠাক
অথচ তাঁর বুকের দুধ শুকিয়ে
গেছে সেই কবে!
আহা! মনে পড়ে তাঁর উষ্ণ আলিঙ্গনের কথা।
আমি আমার বাবাকে কাছে পেতে চাই
বাবা আমাকে বলুক
এখন সব ঠিকঠাক
আমাকে নিয়ে তাঁর গর্ব এখনো ঠিক আগের মতই।
হায়! তাঁর হাতটি এখন কতই না ছোট হয়ে গেছে!
রাস্তার পাশে পাথর গুলো
নিশ্চুপ শুয়ে আছে।
পাথরের মৃদু নি:শ্বাসের শব্দ
শুধুমাত্র কাক শুনতে পায়।
গাছের ফাঁক দিয়ে সূর্য উঠে
এবং
সূর্যের সেই আলো
সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
জানি, স্বর্গই হবে শিশুদের ঠিকানা
তাদের আঙুলগুলো মচকানো
তাদের কোমল চুলগুলো পুড়ে ছাই,
ধুলোমাখা গালের উপর তাদের
টানাটানা চোখগুলো ঘুমিয়ে আছে।
আমি আমার মাকে কাছে পেতে চাই
মা আমাকে বলুক
এখন সব ঠিকঠাক
অথচ তাঁর বুকের দুধ শুকিয়ে
গেছে সেই কবে!
আহা! মনে পড়ে তাঁর উষ্ণ আলিঙ্গনের কথা।
আমি আমার বাবাকে কাছে পেতে চাই
বাবা আমাকে বলুক
এখন সব ঠিকঠাক
আমাকে নিয়ে তাঁর গর্ব এখনো ঠিক আগের মতই।
হায়! তাঁর হাতটি এখন কতই না ছোট হয়ে গেছে!
রাস্তার পাশে পাথর গুলো
নিশ্চুপ শুয়ে আছে।
পাথরের মৃদু নি:শ্বাসের শব্দ
শুধুমাত্র কাক শুনতে পায়।
গাছের ফাঁক দিয়ে সূর্য উঠে
এবং
সূর্যের সেই আলো
সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
প্রচ্ছদঃ সুমন মুখার্জী
*****